পল্লী বিদ্যুৎ এর এজিএম পদের সুযোগ- সুবিধা

 আগামী ৯ মার্চ  বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর আওতাধীন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম এর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অনেকেই এ বিষয়ে আমাকে নক দিয়েছেন কিছু লেখার জন্য। এ বিষয়টা নিয়েই আজকের লেখা। 


চাকুরীর ধরণঃ 

চাকুরীর ধরণ স্থায়ী। সরকারি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এর চাকরি ইহা। পরীক্ষা নিবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর মানব সম্পদ পরিদপ্তর। প্রথমেই বলে রাখি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চাকুরী দুইটা দুই ধরণের। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর বেতন স্কেল জাতীয় বেতন স্কেল। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সমুহের বেতন স্কেল আলাদা ভাবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত। 


পরীক্ষায় কি কি থাকতে পারেঃ

যেহুতু এটা এজিএম অর্থ ও হিসাব পদের পরীক্ষা তাই এখানে একাউন্টিং ও ফিনান্স থেকে কিছু বেশি প্রশ্ন হয়। সাথে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান এর কিছু প্রশ্ন থাকতে পারে। প্রশ্ন মোটামুটি খুবই সহজ হয়। তাই মার্কস অনেক বেশি লাগে। 


পরীক্ষার ধরণঃ

প্রথম দিন প্রিলিমিনারি হবে। পরের দিন রিটেন হবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর সদর দপ্তরে। এর পর ভাইভা হবে। ভাইভাতে মোট মার্কস ২০ তার মধ্যে কাগজপত্র অর্থাৎ রেজাল্ট রিলেটেড ১২ এবং মৌখিক ৮।  এই জবের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো রিটেন পরীক্ষা। এখানে যারা ভালো করবে তারাই জবটি পাবেন। 


পদায়ন/কর্মস্থলঃ

বাংলাদেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যেকোনো সমিতিতে পদায়ন হতে পারে। তবে মোটামুটি কাছের জেলায় হতে পারে। সরকারি নিয়ম মোতাবেক তিন বছর পর পর বদলি হবে।


সুযোগ সুবিধাঃ

আগেই বলেছি এ জবের বেতন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর থেকে আলাদা। কেননা এটার বেতন স্কেল আলাদা ভাবে নির্ধারিত।  শুরুতে ৪৩,০০০ টাকা বেসিক। বাড়িভাড়া ৪০% থেকে শুরু জেলা, বিভাগ ভেদে তা ৫৫% পর্যন্ত হবে, চিকিৎসা ভাতা,বিদ্যুৎ ভাতা, শিক্ষা ভাতা, মোবাইল বিল সহ মোট ৬৫,০০০ থেকে ৭০,০০০ এর মতো পাবেন। এছাড়া দুই ইদে দুটো ইদ বোনাস, পহেলা বৈশাখ ভাতা পাবেন। এপিএ বোনাস পাবেন ১.৫ থেকে ২.০০ বেসিক পর্যন্ত। এটা সমিতির পারফরমেন্স এর ওপর নির্ভর করে। এছাড়াও সরকার ঘোষিত ৫% মোট বেসিকের বিশেষ ভাতা জানুয়ারি ২৪ থেকে চালু হয়েছে। তাছাড়াও সিকুরিটি অ্যালাউন্স পাবেন ২০%। এটা পাবেন যদি আপনি কোয়াটারে থাকেন তাহলে। 


প্রমোশনঃ 

এখানে এজিএম -ডিজিএম-জিএম-সিনিয়র জিএম এই ওরগানোগ্রামে প্রমোশন পাবেন। ডিজিএম হলে জোনাল অফিসের প্রধান হবেন আর জিএম/সিনিয়র জিএম হলে পুরো পবিস এর প্রধান হবেন। জিএম হলে গাড়ি পাবেন। ডিজিএম হলেও পাবেন তবে সেটা XEN দের গাড়ীর মতো।


কাজের ধরণঃ

 এ জবের কাজের ধরণ অন্য সরকারি জবের থেকে বেশ আলাদা। এখানে ৯.০০টা ৫.০০ টা  অফিস জবের বাহিরেও কিছু সময় দিতে হয়। মূলত এখানে সমিতির জিএম এর ওপর নির্ভর করবে অফিস টাইম। অনেক জিএম ৫.০০ টার পরও অফিসে থাকেন তখন আপনাকেও থাকতে হবে। 


এখানে আপনি একটা ডিপার্টমেন্ট এর হেড থাকবেন আপনার অধীনে ৮/১০ জন সহকারী হিসাবরক্ষক /হিসাবরক্ষক থাকবে। আপনার কাজ হলো তাদের নিকট হতে কাজ তোলা। তবে একটু প্রেশার থাকবে কেননা এখানে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর সাথে আপনাকে কাজ করতে হবে। তাদের চাহিদা মোতাবেক তথ্য বোর্ডে প্রেরণ করতে হবে। 


অবসরকালীন সুবিধাঃ

অবসরে গেলে আপনি গ্রাচুইটি পাবেন। এখানে মাসে মাসে পেনশন পাবেন না। তবে জিএম হিসেবে অবসরে গেলে প্রায় ১.৫০ কোটি থেকে প্রায় ২.৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত এককালীন অর্থ পাবেন।


যারা সিলেক্টেড হবেন তারা এটা ভেবেই আসবেন যে এটা জরুরি বিদ্যুৎ বিতরণ সার্ভিস এখানে প্রেশার থাকবেই।  এটা মানতে পারলে আপনার ভালো লাগবে। তা না হলে প্রথম প্রথম বেশ অস্থির হয়ে উঠবেন। 


সকলের জন্য শুভকামনা রইল। 


মোঃ ইব্রাহিম হোসেন 

সহকারী পরিচালক (অর্থ) 

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড 

৪১তম বিসিএস সুপারিশপ্রাপ্ত।

Post a Comment

0 Comments